উত্তর : ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারত স্বাধীন হলেও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তাকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় । এই সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠনের সমস্যা ।
( i) পটভূমি : ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের পর থেকেই ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠনের জন্য নানা প্রদেশে আন্দোলন গড়ে ওঠে । এর বেশি প্রভাব পড়ে দক্ষিণ ভারতে । এর কারণ ছিল এই যে ,ভারতের স্বাধীনতার অব্যবহিত পর ভারতীয় রাজ্যগুলির মধ্যে ভাষাগত তথা সংস্কৃতিগত ঐক্য গড়ে ওঠেনি । সেজন্যই মহাত্মা গান্ধি ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন ।
( ii ) দেশীয় রাজ্যের সংযুক্তি : ভারত স্বাধীন হওয়ার পর দেশীয় রাজ্যগুলি নানা উপায়ে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়, কিন্তু এর পরও আর এক সমস্যা তৈরি হয় । তা হল ( a ) এই রাজ্যগুলির সীমানা কী হবে ।
( b ) তাদের নিয়ে পৃথক রাজ্য গড়া হবে কি - না ।
( c ) তাদের পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে কি - না ইত্যাদি ।
( iii ) ভাষাভিত্তিক প্রদেশ কমিশন : উপরোক্ত সমস্যাবলি সমাধানের জন্য ভারত সরকার ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে এস কে ধরের নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করে । এই কমিশন ভারতের ভাষাভিত্তিক প্রদেশ গঠনের বিপক্ষে মত দেয় । তাঁদের যুক্তি ছিল তাহলে ভারতের ঐক্য ও অখণ্ডতা বিনষ্ট হবে ।
( iv ) আন্দোলনের সূচনা : এই ঘোষণা ভাষাভিত্তিক রাজ্য দাবিকে আরও সোচ্চার করে । ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামালু মাদ্রাজ প্রদেশের তেলুগু ভাষাভাষী অঞ্চল নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে অনশন শুরু করে । ৫৮ দিনের মাথায় তিনি মারা যান । ফলে আন্দোলন মারাত্মক আকার ধারণ করে ।
মন্তব্য : শেষপর্যন্ত ভারত সরকার আন্দোলনের কাছে নতি স্বীকার করে । ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে তেলুগু ভাষাভাষী অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয় অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তামিল ভাষাভাষীদের নিয়ে গঠিত হয় তামিলনাড়ু রাজ্য । এইভাবে ভারতে ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয় ।