উত্তর : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় । ভারতে উচ্চশিক্ষার প্রসারে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবদান অনস্বীকার্য ।
( i ) পাঠ্যক্রম : প্রাথমিকভাবে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৪ টি বিভাগ ( কলা , আইন , চিকিৎসা ও ইঞ্জিনিয়ারিং ) খোলা হয় । প্রাথমিক পর্যায়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ ছিল পরীক্ষা গ্রহণ ও কৃতকার্য ছাত্রদের ডিগ্রি দেওয়া । পরে স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টায় উচ্চশিক্ষা তথা গবেষণামূলক কাজের জন্য গড়ে ওঠে কলিকাতা বিজ্ঞান কলেজ ( ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ ) ।
( ii ) শিক্ষার প্রসার : কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাত ধরে — ( a ) গ্রামাঞ্চলেও অনেক উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় ও কলেজ গড়ে ওঠে ।
( b ) কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ৩ বছরের ফলাফল থেকে জানা যায় বাংলায় ২১০ জন ছাত্র প্রবেশিকা পরীক্ষায় ও ২২ জন ছাত্র বিএ পাস করে । ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও যদুনাথ বসু এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম স্নাতক হন ।
( iii ) নারী শিক্ষার প্রসার : কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৩ দশক পর্যন্ত এখানে নারীদের পরীক্ষায় বসার অধিকার ছিল না । কিন্তু ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীশিক্ষা আইনসম্মত হয় । যদিও ইতিপূর্বে ( ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দ ) কাদম্বিনী গাঙ্গুলি ও চন্দ্রমুখী বসু এখান থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন ।
( iv ) উচ্চশিক্ষার প্রসার : কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ক্রমে এখানে উচ্চশিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত হয় । বহু মেধাবী ছাত্ররা এখান থেকে বিভিন্ন বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন । এ প্রসঙ্গে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, মহেন্দ্রলাল সরকার ,আশুতোষ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ ।
উপসংহার : এইভাবে উচ্চশিক্ষা প্রসারের মধ্যদিয়ে বাংলায় যে - জাতীয়তাবাদ ও নবজাগরণের পথ প্রশস্ত হয়েছিল তা বলাই বাহুল্য ।