উত্তর : বিশ শতকের শুরু থেকেই ভারত তথা বাংলার নানা স্থানে বিপ্লবী আন্দোলন সংগঠিত হতে শুরু করে । সেই আন্দোলনে শুধু পুরুষরাই নয় ; নারী সমাজও নানাভাবে এগিয়ে আসে ।
( i ) সংখ্যায় কম : বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন চলাকালে বাংলায় একাধিক বিপ্লবী সমিতি গড়ে ওঠে । তাতে অগণিত ছাত্র - যুব যোগদান করে । কিন্তু সে তুলনায় বিপ্লবী নারী সংগঠন ও নারীজাতির যোগদানের দৃষ্টান্ত ছিল কম । তবে নারীদের মধ্যে বিপ্লবী চেতনা গড়ে তোলার জন্য লীলা রায় দীপালি সংঘ গড়ে তোলেন ।
( ii ) বিপ্লবীদের কাজে সাহায্য : প্রথম থেকেই নারীরা কিন্তু হাতে অস্ত্র তুলে নেয়নি । তাদের কাজ ছিল পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে বিপ্লবীদের আশ্রয় দেওয়া , গোপনে বিপ্লবীদের ডেরায় অস্ত্রের জোগান দেওয়া , বিপ্লবীদের মধ্যে খবরা - খবর আদান প্রদান করা , গুরুতর আহত বিপ্লবীদের সেবাশুশ্রুষা করা , অর্থ জোগান দেওয়া ইত্যাদি ।
( iii ) প্রত্যক্ষ সংগ্রাম : ১৯৩০ -এর দশকে বিপ্লবী আন্দোলনে নারীদের যোগদানের ফলে বিপ্লবী আন্দোলনের চরিত্রে পরিবর্তন ঘটে । এই সময় থেকে নারীরা সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের সঙ্গে সংযুক্ত হয় । এ প্রসঙ্গে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার , কল্পনা দত্ত ও বীণা দাসের নাম প্রণিধানযোগ্য ।
( iv ) আত্মত্যাগ : সশস্ত্র স্বাধীনতা আন্দোলনে নারীদের যোগদান প্রমাণ করেছিল যে , নারীশক্তির মধ্যেও জাতীয়তাবোধের ঘাটতি নেই । পুলিশের অকথ্য অত্যাচার সহ্য করে বহু বিপ্লবী নারী কারাবরণ করে । আবার ধরা পড়ার আগে পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করার ঘটনাও বিরল নয় ।
মন্তব্য : এইভাবে বিশ শতকের বঙ্গ নারীরা প্রমাণ করেছিল যে , তারা শুধু স্নেহময়ীনারী নয় ; দেশমাতৃকার শৃঙ্খল মোচনে হাতে অস্ত্র তুলে নিতেও তারা পিছপা হয় না ।