বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার বিকাশে বসুবিজ্ঞান মন্দিরের অবদান আলোচনা করো ।

মাধ্যমিক দশম টেন ইতিহাস madhyamik class 10 x history questions answers প্রশ্নোত্তর বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার বিকাশে বসুবিজ্ঞান মন্দিরের অবদান আলোচনা করো banglai biganchorchar bikashe bosubigan mondirer obodan alochona koro


উত্তর : বিজ্ঞানচর্চার বিষয়ে স্যার জগদীশচন্দ্র বসু এবং বসুবিজ্ঞান মন্দিরের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বের দাবি রাখে । ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের ৩০ নভেম্বর বসুবিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় । 


( i ) প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট : প্রেসিডেন্সি কলেজে ( বর্তমান প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ) দীর্ঘকাল বিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যাপনা ও গবেষণার কাজ অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে ৪৭ বৎসর বয়সে অবসর গ্রহণ করেন । এই সময় কলকাতায় তার বাসগৃহের সংলগ্ন অঞ্চলে জমি করেন ক্রয় করা হয় এবং ওইখানেই ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের ৩০ নভেম্বর একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণাগার প্রতিষ্ঠাকরা হয় । এই প্রতিষ্ঠানই বসুবিজ্ঞান মন্দির নামে খ্যাত হয় । 


( ii ) প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্য : বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও জ্ঞানের প্রসার ঘটানো ছিল এই প্রতিষ্ঠানের মুখ্য উদ্দেশ্য । প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের প্রথম সারির গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলির একটি , যেখানে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ের পরস্পর নিরপেক্ষ গবেষণার সঙ্গে বায়োফিজিকস অর্থাৎ বায়োলজি ও ফিজিকসের মতো একটির সঙ্গে অন্যের সম্পর্কযুক্ত বিষয়ের গবেষণার উদ্যোগ নেওয়া হয় । 


( iii ) পরিকল্পনার বাস্তবায়ন : ইংল্যান্ডের রয়াল ইন্সটিটিউট - এর অবলম্বনে বসুবিজ্ঞান মন্দিরের পরিকল্পনা এবং প্রতিষ্ঠার বিষয়টি তিনি মনে মনে লালন করে আসছিলেন অনেকদিন ধরে । তার বাস্তবায়ন ঘটে ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের ৩০ নভেম্বর ।বসুবিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সংযুক্ত মন্দির নামটি সার্থক । কারণ ভারতীয় শিল্পের আধারে মন্দিরের মতোই এর গঠনশৈলী । অন্যদিক দিয়ে বিচার করলে বসুবিজ্ঞান মন্দির জাতীয় বিজ্ঞানচর্চার মন্দিরও বটে । এখানে শুধু বিজ্ঞানের চর্চা নয় , প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের নানা ধারায় পাঠ্যক্রম ও গবেষণা অব্যাহত । 
 

( iv ) জগদীশচন্দ্র বসুর অভিব্যক্তি : জগদীশচন্দ্র বসু মনে করতেন এই বিজ্ঞান মন্দিরে যেসব আবিষ্কার হবে , তার সুফল যেন সকলেই পায় । বিজ্ঞানের যাবতীয় প্রগতি যেন সর্বসাধারণের মধ্যে পরিব্যাপ্ত হয় । এইভাবে বসুবিজ্ঞান মন্দির বর্তমানে বিজ্ঞান গবেষণার ক্ষেত্রে এক মহিরুহে পরিণত হয়েছে । দেশ -বিদেশের ছাত্র , গবেষকরা এখানে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন । ইতিমধ্যেই তাদের নানাবিধ গবেষণা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের স্বীকৃতি লাভ করেছে । 



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন