উত্তর : মহারাষ্ট্রে বিপ্লবী আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ছিলেন বিনায়ক দামোদর সাভারকার । বাল্যকালেই তিনি ‘ বালসমাজ ’ আন্দোলন দ্বারা প্রভাবিত হন এবং বিপ্লববাদের অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত হন ।
( i ) অভিনব ভারত প্রতিষ্ঠা : ছাত্রাবস্থাতেই সাভারকরের মনে জাতীয় চেতনা গভীরভাবে গ্রথিত হয় । পরে ভারতের মুক্তির জন্য তিনি সশস্ত্র বিপ্লববাদের মন্ত্রে দীক্ষিত হন । ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে ম্যাৎসিনির ‘ইয়ং ইটালির’ অনুকরণে তিনি গড়ে তোলেন মিত্রমেলা । ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে এর নাম বদলে হয় অভিনব ভারত ।
( ii ) বিপ্লবী কার্যকলাপ : ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি বিপ্লবী শ্যামজি কৃষ্ণবর্মার ডাকে লন্ডন চলে যান । এখানে তিনি ইন্ডিয়া হাউসের কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন । পরে তিনি ইন্ডিয়া হাউস পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন । সেখান থেকেই তিনি ভারতীয় বিপ্লবীদের হাতে বোমা তৈরির কৌশল ও অস্ত্রশস্ত্র পাঠাতেন ।
( a ) জ্যাকসন হত্যা : সাভারকারের প্রচেষ্টায় লন্ডনের বিপ্লবী মদনলাল ধিংড়া লর্ড কার্জন উইলি নামে এক সরকারি কর্মচারীকে হত্যা করেন । এদিকে ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে তাঁরই প্রেরিত অস্ত্রে অভিনব ভারতের বিপ্লবীরা নাসিকের অত্যাচারী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মি . জ্যাকসনকে হত্যা করে ।
( b ) নাসিক ষড়যন্ত্র মামলা : সব ঘটনা জানাজানি হলে ব্রিটিশ পুলিশ ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে সাভারকারকে গ্রেফতার করে । তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয় নাসিক ষড়যন্ত্র মামলা । বিচারের রায়ে তাঁকে ২৬ বছরের জন্য আন্দামানে দ্বীপান্তর করা হয় ।
মূল্যায়ন : কিন্তু নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই সাভারকরের কারাবসান হয় । ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর কারামুক্তি হয় এবং তিনি হিন্দু মহাসভার সভাপতি হন । ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দেএই মহান দেশপ্রেমী বিপ্লবীর জীবনাবসান হয় । বিনায়ক দামোদর সাভারকার তাঁর ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব ও ভারতের মুক্তি আন্দোলনের জন্য বীর সাভারকার উপাধিতে ভূষিত হন ।