মাতঙ্গিনি হাজরা টীকা লেখো ।

মাধ্যমিক দশম টেন ইতিহাস madhyamik class 10 x history questions answers প্রশ্নোত্তর মাতঙ্গিনি হাজরা টীকা লেখো matongini hajra tika lekho


উত্তর : ভারতের মুক্তি আন্দোলনে বহু জাতীয়তাবাদী নারী যোগদান করেছিলেন । বাংলার মাতঙ্গিনি হাজরা ছিলেন এঁদের মধ্যে অন্যতমা । ভারত ছাড়ো আন্দোলনে তাঁর আত্ম বলিদানের ঘটনায় তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন । 

( i ) প্রাথমিক ভূমিকা : বাংলায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে যোগদানের মধ্যদিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর হাতেখড়ি হয় । আইন অমান্য আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে তিনি ৬ মাসের জন্য কারাবরণ করেন । কারামুক্তির পর তিনি জাতীয় কংগ্রেসের সদস্যপদ গ্রহণ করেন । ক্রমে তিনি গান্ধিজির সত্যাগ্রহ ও জাতীয়তাবাদী আদর্শে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হন । 

( ii ) ভারত ছাড়ো আন্দোলন : ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৯ আগস্ট গান্ধিজি ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে ভারতবাসীর শেষ লড়াইয়ের ডাক দেন । সেই আন্দোলনে দেশের আবালবৃদ্ধ বনিতা শামিল হয় ।বাদ যাননি মেদিনী পুরের ৭৩ বছরের বৃদ্ধা মাতঙ্গিনি হাজরা । 

( iii ) মাতঙ্গিনি হাজরার ভূমিকা : প্রথমে তিনি গ্রামের মহিলা ও নিরক্ষর মানুষজনদের সংঘবদ্ধ করেন । ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ২৯ সেপ্টেম্বর তাঁর নেতৃত্বে ২০ হাজার মানুষের এক মহামিছিল তমলুক অভিযান করে । তাদের লক্ষ্য ছিল তমলুক থানা ও আদালত । কিন্তু এই মিছিলের ওপর পুলিশ নির্মমভাবে গুলি চালায় । তাতে বহু মানুষ হতাহত হয় । সেই তালিকায় ছিলেন মাতঙ্গিনি হাজরা । 

( iv ) মাতঙ্গিনি হাজরার দেশপ্রেম : মৃত্যুর আগে তিনি যে দৃষ্টান্ত রচনা করেন তা অভূতপূর্ব । পরপর গুলি খেয়ে তিনি যখন মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন , তখনও ভারতের জাতীয় পতাকাকে তিনি ভূলুণ্ঠিত হতে দেননি । বন্দেমাতরম ধ্বনি দিয়ে জাতীয় পতাকাকে বুকে আগলে রেখেছিলেন । 


মূল্যায়ন : মাতঙ্গিনি হাজরার এই নজিরবিহীন দেশপ্রেমের নমুনা আজও আমাদের শরীর ও মনে শিহরণ জাগায় । তাই তিনি দেশবাসীর কাছে আজও স্মরণীয়া হয়ে আছেন । গান্ধিবাদী আদর্শ পালনের জন্য তাঁকে বলা হয় ‘গান্ধিবুড়ি’ । তাঁর অদম্য সাহস ও স্বদেশপ্রীতির জন্য অনেকে তাঁকে বাংলার ‘জোয়ান অব্ আর্ক ’ নামে ডাকেন । 



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন