উত্তর : উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের একটি উল্লেখযোগ্য বিদ্রোহ হল সাঁওতাল বিদ্রোহ । ১৮৫৫-১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত এই বিদ্রোহ ব্রিটিশ প্রশাসনকে যথেষ্ট চিন্তায় ফেলেছিল ।
( i ) অতিরিক্ত করের বোঝা : সাঁওতালদের ওপর জমিদাররা জোর করে ক্রমবর্ধমান খাজনা চাপিয়ে দেয় । যা তাদের কাছে অসহনীয় ছিল । এ ছাড়া তাদের কাছ থেকে জমিদারেরা নানা ধরনের শুল্ক আদায় করত ।
( ii ) মহাজনি শোষণ : সাঁওতালদের কাছ থেকে মহাজনরা নগদে খাজনা আদায় করত । তাই তারা নগদ অর্থের জন্য মহাজনদের কাছে ঋণ নিত । এই সুদের হার ছিল শতকরা ৫০-৫০০ টাকা । সুদের অর্থ না -দিতে পারলে তাদের জেলে যেতে হত ,কিন্তু জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পুনরায় মহাজনি ঋণের শিকার হতে হত । ঋণশোধ না -হওয়া পর্যন্ত তাদের জমিদারদের জমির মতো মহাজনদের জমিতেও বেগার শ্রমদিতে হত । এই বেগার শ্রমের নাম ছিল কামিয়াতি ও হারওয়াতি ।
( iii ) ব্যবসায়ীদের বঞ্চনা : দরিদ্র ও নিরক্ষর সাঁওতালদের ব্যবসায়ীরা নানাভাবে ঠকাত । তারা সাঁওতালদের কাছ থেকে জিনিস কেনার সময় বেশি ওজনের কেনারাম বাটখারা ব্যবহার করত , জিনিস বিক্রি করার সময় কম ওজনের বেচারাম বাটখারা ব্যবহার করত ।
( iv ) ধর্মান্তরিতকরণ প্রচেষ্টা : সাঁওতালদের বাসভূমিতে খ্রিস্টান মিশনারিরা তাদের ধর্মান্তরিতকরণের প্রচেষ্টা চালিয়েছিল । ফলে সাঁওতালরা ক্ষুব্ধ হয় ।
উপসংহার : এইভাবে অত্যাচারিত হতে হতে একদিন তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় । শেষ পর্যন্ত ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে সিধু ও কানহুর নেতৃত্বে তারা সংঘবদ্ধ হয় এবং ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করে ।