উত্তর : ইংরেজ কোম্পানির শোষণমূলক ভূমিরাজস্বনীতি ও অপশাসনের জাঁতাকলে পড়ে এদেশের কৃষকদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছিল । তাই তারা নানা সময় নানা ক্ষেত্রে বিদ্রোহের পথ ধরেছিল ।
( i ) রাজস্ববৃদ্ধি : ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে দেওয়ানি লাভের পর থেকেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা -বিহার - ওড়িশায় ভূমিরাজস্বের পরিমাণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে ।সেই ধারা অব্যাহত ছিল কোম্পানি প্রবর্তিত বিভিন্ন ভূমিরাজস্ব বন্দোবস্তে ( যেমন— চিরস্থায়ী , রায়তওয়াড়ি ইত্যাদি ) ।
( ii ) জমির স্বত্বলোপ : চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দ্বারা সুবা- বাংলার জমির মালিকানা চলে যায় জমিদারদের হাতে । এরফলে বহু কৃষক ভূমিহীন কৃষকে পরিণত হয় ।
( iii ) জমিদারি শোষণ : খরা , বন্যা বা অন্য কোনো কারণে ফসল নষ্ট হলে অথবা অজন্মা হলেও রাজস্ব মুকুব করা হত না । বরং খাজনা বাকি পড়লে কৃষকদের জমি থেকে উৎখাত করা হত । উপরন্তু জমিদারগণ ইচ্ছামতো অতিরিক্ত খাজনা আদায় করত ।
( iv ) মহাজনি শোষণ : সরকার নগদে ও উচ্চহারে রাজস্ব আদায় শুরু করলে কৃষকরা মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নেওয়া শুরু করে । কিন্তু মহাজনরা কৃষকদের অশিক্ষার সুযোগ নিয়ে তাদের সর্বস্বান্ত করত । ফলে তারা ঋণের জালে আবদ্ধ হত । অনেক ক্ষেত্রে তারা কৃষকদের কাছ থেকে বেগার শ্রম আদায় ।
মন্তব্য : এইভাবে অত্যাচারিত হতে হতে কৃষকদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় । তারা কোম্পানি ও জমিদারদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হয় । যার ফলে ভারতের নানা স্থানে অনেকগুলি কৃষকবিদ্রোহ সংঘটিত হয় ।