উত্তর : ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে AITUC প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ভারতে বামপন্থী শ্রমিক আন্দোলন জোরদার হয় । এই অবস্থায় ব্রিটিশ সরকার এই আন্দোলন বন্ধ করার জন্য উঠেপড়ে লাগে । মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা ছিল তারই ফলশ্রুতি ।
( i ) মামলার পটভূমি : ১৯২০ -র দশকে ভারতে বামপন্থী শ্রমিক আন্দোলনের প্রসার দেখে ব্রিটিশ সরকার চিন্তান্বিত হয় । বিশেষ করে শ্রমিক সংগঠনগুলির জঙ্গি মনোভাব সরকারকে ভাবিত করে । এই অবস্থায় সরকার নড়েচড়ে বসে ।
( a ) ফলস্বরূপ ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে শ্রমিক বিরোধী ট্রেড ডিসপিউট বিল ও পাবলিক সেফটি অ্যাক্ট ঘোষণা ।
( b ) এ ছাড়া সরকার হুইটলি কমিশন বসিয়ে শ্রমিক আন্দোলনকে দুর্বল করার চেষ্টা করে ।
( ii ) মামলা দায়ের : এরপর ওই বছরই ( ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দ ) সরকার ধরণী গোস্বামী , মুজাফ্ফর আহমদ , পি সি যোশী , এস এ ডাঙ্গে সহ ৩৩ জন বামপন্থী শ্রমিক নেতাকে আটক করে । তাঁদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের মামলা দায়ের করা হয় । এই মামলাকেই বলা হয় মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা ।
( iii ) মামলার ফল : মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা প্রায় সাড়ে ৪ বছর ধরে চলে । ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে মামলার রায় ঘোষিত হয় । সেই রায়ে অধিকাংশ নেতাকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং তাঁদের দীর্ঘ কারাদণ্ড দেওয়া হয় । এ ছাড়া সাম্যবাদী দলের সমস্ত প্রচারকার্য বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং এই দল নিষিদ্ধ ঘোষিত হয় ।
( iv ) সুদূরপ্রসারী ফল : এই মামলার ফলে ভারতে সাম্যবাদী আন্দোলন জোর ধাক্কা খায় । তবে ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে আচার্য নরেন্দ্র দেব ও জয়প্রকাশ নারায়ণের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দল ।
মন্তব্য : মিরাট ষড়যন্ত্র মামলাকে দেশ -বিদেশের গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ ভালো চোখে দেখেনি । ব্রিটিশ শ্রমিক দল এই মামলাকে একটি জুডিসিয়াল স্ক্যান্ডাল বলে অভিহিত করে ।