উত্তর : সর্বভারতীয় রাজনীতিতে যোগদানের আগে গান্ধিজি ১৯১৭ থেকে ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে তিনটি আঞ্চলিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন । এই তিনটি আন্দোলন ছিল — চম্পারন নীল আন্দোলন , গুজরাটের খেড়া বা কৈরাতে কৃষকের খাজনা বন্ধের দাবি সংক্রান্ত আন্দোলন এবং আমেদাবাদ শ্রমিক আন্দোলন ।
( i ) আন্দোলনের কারণ : বিহারের চম্পারন জেলার নীলচাষিরা বহুদিন ধরে নীলকর সাহেবদের দ্বারা অত্যাচারিত হচ্ছিল । তিনকাঠিয়া প্রথা অনুসারে এখানকার চাষিরা বিঘা প্রতি তিন কাঠা জমিতে নীল চাষ করতে বাধ্য হত । এই প্রথা বন্ধের দাবিতে চাষিরা সোচ্চার হয় ।
( ii ) গান্ধিজির নেতৃত্ব : এই অবস্থায় ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে গান্ধিজি চম্পারন অভিমুখে যাত্রা করেন । স্থানীয় নেতৃবৃন্দ মজর - উল - হক , মহাদেব দেশাই ,ব্রজকিশোর প্রসাদ ও আচার্য কৃপালনীকে সঙ্গে নিয়ে চম্পারনে গিয়ে নীল চাষিদের সমর্থনে নীলকর সাহেবদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন । কিন্তু জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গান্ধিজিকে চম্পারন ত্যাগ করতে আদেশ দেন । গান্ধিজি এই আদেশ অমান্য করলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাঁর বিচার হয় । বিহার সরকার গান্ধিজিকে মুক্তি দেয় ।
( iii ) ফলাফল ও গুরুত্ব : বিহার সরকার গান্ধিজিকে মুক্তি দিয়ে তাঁকে চম্পারন নীল চাষিদের অবস্থা অনুসন্ধানের অনুমতি দেয় । শেষপর্যন্ত সরকার বিহারের নীলচাষিদের করুণ অবস্থার কথা স্বীকার করে নেয় ।
( a ) ‘ চম্পারন কৃষি বিল ’ দ্বারা তিনকাঠিয়া প্রথার অবসান চরি ঘটানো হয় ।
( b ) এখানকার খাজনার হার ২০-২৩ শতাংশ হ্রাসকরা হয় ।
( c ) এই আন্দোলন ছিল গান্ধিজির নেতৃত্বে প্রথম‘ সত্যাগ্রহ’ ।
( d ) ঐতিহাসিক ড .রমেশচন্দ্র মজুমদার স্পষ্টই বলেছেন যে , চম্পারন সত্যাগ্রহ হল সর্বভারতীয় রাজনৈতিক নেতা হিসেবে গান্ধিজির উত্থানের প্রথম পদক্ষেপ ।