উত্তর : বঙ্গ বিভাজনের পিছনে লর্ড কার্জন যতই তাঁর প্রশাসনিক ব্যাখ্যা বা মহৎ উদ্দেশ্যের কথা প্রচার করুন না কেন আসলে এর পিছনে ছিল তাঁর গভীর চক্রান্ত।
( i ) বাঙালিকে দুর্বল করা : কার্জনের উদ্দেশ্য ছিল ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নীতি দ্বারা পূর্ববাংলায় হিন্দুদের সংখ্যালঘু করে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে বিভেদের প্রাচীর গড়ে তোলা । পক্ষান্তরে বাঙালি জাতিকে দুর্বল করা ।
( ii ) জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দুর্বল করা : তিনি জানতেন বাঙালি হিন্দু- মুসলমানের ঐক্যে ফাটল ধরলেই ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দুর্বল হবে । কারণ সেই সময় বাংলা তথা বাঙালি ছিল ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ধারক ও বাহক ।
( iii ) কংগ্রেসকে দুর্বল করা : সেইসময় ( ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দ ) জাতীয় কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতারা ছিলেন বাঙালি । সুতরাং , বাঙালির ঐক্য বিনষ্ট করা মানেই জাতীয় কংগ্রেসের ঐক্য ও সংহতিকে দুর্বল করা ।
( iv ) ব্রিটিশ সরকারের স্থায়িত্ব : কার্জনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গ বিভাজনের মধ্যদিয়ে এদেশে ব্রিটিশ সরকারের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করা । অর্থাৎ , ব্রিটিশ সরকারকে বিপদমুক্ত করে এদেশে তার স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করা ।
মন্তব্য : কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে , কেম্ব্রিজ গোষ্ঠীর গবেষকগণ কার্জনের বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন । তাঁরা বলেছেন যে, বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন বা স্বদেশি আন্দোলনের পিছনে কংগ্রেসের কোনো মহৎ উদ্দেশ্য ছিল না ।