উত্তর : প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট কারণে জলের সঙ্গে বিভিন্নপ্রকার বর্জ্য, দূষিত ও বিষাক্ত পদার্থ ইত্যাদি মিশে যাওয়ার ফলে জল যদি নােংরা হয় এবং জলের ভৌত , রাসায়নিক ও জৈব বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন ঘটে এবং এর ফলস্বরূপ জলজ উদ্ভিদ, প্রাণী ও মানুষের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে , তাহলে তাকে জলদূষণ বলে ।
[ ] জলদূষণের কারণ : নানা কারণে জল দূষিত হয়ে থাকে । নীচে কয়েকটি কারণ আলােচিত হল ।
( ১ ) কৃষিক্ষেত্রের বর্জ্য দ্বারা দূষণ : গ্রামাঞ্চলে চাষের জন্য ব্যবহৃত কীটনাশক , আগাছানাশক , রাসায়নিক সার ইত্যাদি প্রধানত বৃষ্টির জলের সঙ্গে ধুয়ে গিয়ে নিকটবর্তী নদীনালা বা পুকুরের জলে মেশে এবং জলকে দূষিত করে । কৃষিতে ব্যবহৃত নাইট্রেট,ফসফেটজাতীয় রাসায়নিক সার থেকে ইউট্রোফিকেশন -এর মতাে সমস্যার সৃষ্টি হয় ।
( ২ ) কলকারখানার বর্জ্য দ্বারা দূষণ : শহরাঞ্চলে কলকারখানার দূষিত বর্জ্য নদী, সমুদ্র ও বড়াে জলাশয়ে এসে মেশে এবং জলদূষণ ঘটায় ।
( ৩ ) জীবাণু গৃহস্থালির প্রাত্যহিক আবর্জনা দ্বারা দূষণ : গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত জলে খাদ্যদ্রব্যের ফেলে দেওয়া অংশ , তরকারির পচা অংশ , মলমূত্র , সাবান , ডিটারজেন্ট ইত্যাদি মিশে থাকে । ব্যাকটেরিয়া , প্রােটোজোয়া ইত্যাদি মিশ্রিত এই নােংরা জল নর্দমা, পয়ঃপ্রণালী দিয়ে নদনদী , হ্রদ, খাল বা সমুদ্রের জলে পড়ে ও দূষণ ঘটায় ।
( ৪ ) যথেচ্ছ ব্যবহারজনিত দূষণ : বিভিন্ন জলাশয়ের জল , মানুষের যথেচ্ছ ব্যবহার , যেমন —মলমূত্র ত্যাগ , স্নান, বাসনপত্র ধোয়া, গবাদি পশুর স্নান বা কাপড় কাচার ফলে দূষিত হয় ও তাতে বিভিন্ন প্রকার জীবাণু জন্মায় ।
( ৫ ) ভারী ধাতু দ্বারা দূষণ : ভৌমজলের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে মাটির নীচে জলস্তর স্বাভাবিকের থেকে অনেক নীচে নেমে যায় ,যার ফলে জলে আর্সেনিক ও ফ্লুরাইডের ঘনত্ব বেড়ে যায় এবং জলদূষণ ঘটায় ।