উত্তর : ভারত নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় ভারতের অধিবাসীদের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের ওপর নদনদীগুলির প্রভাব অপরিসীম ।
(১) জলসেচের প্রসার : উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি থেকে অসংখ্য নিত্যবহ ও প্লাবন খাল কেটে কৃষিজমিতে জলসেচ করা হয় ।
উদাহরণ : পাঞ্জাবের পশ্চিম যমুনা খাল ও শিরহিন্দ খাল উল্লেখযোগ্য ।
(২) সভ্যতা - সংস্কৃতির বিকাশ : পৃথিবীর প্রাচীন সভ্যতাগুলি নদীকেন্দ্রিক , ভারতের প্রাচীন সিন্ধুসভ্যতা সিন্ধুনদ ও তার একাধিক উপনদীগুলিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে ।
(৩) পণ্য পরিবহণ : একমাত্র জলপথেই কম পরিবহণ ব্যয়ে পর্যাপ্ত পণ্য পরিবহণ করা যায় । ভারতের সুনাব্য নদীগুলিকে বহু প্রাচীন থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত পণ্য ও যাত্রী পরিবহণের কাজে লাগানো হয় ।
উদাহরণ : দক্ষিণ ভারতের গোদাবরী , কৃষ্ণা , কাবেরী নদীগুলি পণ্য পরিবহণের কাজে ব্যবহৃত হয় ।
(৪) জলবিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন : পার্বত্য ও মালভূমি অঞ্চলে নদীগুলির খরস্রোতা প্রবাহকে কাজে লাগিয়ে বহুমুখী নদী পরিকল্পনার দ্বারা জলবিদ্যুৎ শক্তি উৎপন্ন করা হয় ।
উদাহরণ : দামোদর নদের ওপর পাঞেৎ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে ।
(৫) কৃষিজমির বৃদ্ধি : নদীবাহিত উর্বর পলিমাটি ভারতের কৃষিজমির আয়তন বৃদ্ধি করে অঞ্চলগুলিকে শস্যশ্যামলায় পরিণত করে ।
উদাহরণ : উত্তর ভারতের গাঙ্গেয় সমভূমি ।
(৬) মৎস্য আহরণ : ভারতের বিভিন্ন নদীগুলি থেকে পর্যাপ্ত মৎস্য সংগ্রহ করে প্রচুর মানুষ জীবিকানির্বাহ করে ।
উদাহরণ : উত্তর ভারতের গঙ্গা , যমুনা , শোন প্রভৃতি নদীগুলি মৎস্য আহরণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
(৭) পানীয় জল সরবরাহ : পানীয় জলের প্রধান উৎস নদীর জল । নদী সংলগ্ন শহর ও গ্রামগুলিতে নদীর জল শোধন করে পানীয় জল হিসেবে ব্যবহার করা হয় ।
উদাহরণ : গঙ্গার জল পরিশ্রুত করে নিকটবর্তী শহরে সরবরাহ করা হয় ।
(৮) শিল্পকেন্দ্র ও বাণিজ্যকেন্দ্র : নদনদীর উত্তর তীরের ভূপ্রকৃতি সমতল হওয়ায় , সুলভ পণ্য পরিবহণের সুবিধা থাকায় এবং জল সরবরাহের সুবিধা থাকায় অসংখ্য বাণিজ্য ও শিল্পকেন্দ্র গড়ে ।
উদাহরণ : দামোদর নদের ওপর পাঞেৎ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে ।