ভারতবর্ষে শিক্ষা বিস্তার প্রসঙ্গে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বাদীদের দ্বন্দ্ব সম্পর্কে যা জানো লেখো ।

মাধ্যমিক দশম টেন ইতিহাস madhyamik class 10 x history questions answers প্রশ্নোত্তর ভারতবর্ষে শিক্ষা বিস্তার প্রসঙ্গে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বাদীদের দ্বন্দ্ব সম্পর্কে যা জানো লেখো bharatborshe shikha bistar prosonge pracho o paschatya badider dondo somporke ja jano lekho


উত্তর : ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনে ব্রিটিশ সরকার ভারতবর্ষের শিক্ষা খাতে বছরে ১ লক্ষ টাকা ব্যয় করার কথা ঘোষণা করে । কিন্তু সেই টাকা কোন্ খাতে ব্যয় হবে তার স্পষ্ট ইঙ্গিত ছিল না । তাই এই বিষয়কে কেন্দ্রকরে প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বেধে যায় । 


( i ) GCPI গঠন : এই অবস্থায় ভারতে কোম্পানির  শিক্ষানীতি নির্ধারণের জন্য এবং শিক্ষাখাতে মঞ্জুরিকৃত ১ লক্ষ টাকা কীভাবে ব্যয় করা হবে , তার জন্য কোম্পানি ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইন্সট্রাকশন ( GCPI ) নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে । 

( ii ) প্রাচ্যবাদীদের মত : GCPI- এর সম্পাদক উইলসন - সহ স্যার প্রিন্সেপ, কোলব্রুক প্রমুখ পণ্ডিত চাইছিলেন কোম্পানির শিক্ষানীতির লক্ষ্য হোক ভারতীয় ভাষা , সাহিত্য ও দর্শন ।  


( iii ) পাশ্চাত্যবাদীদের যুক্তি: অন্যদিকে পাশ্চাত্যবাদীরা চাইছিলেন এদেশের শিক্ষার মাধ্যম হোক ইংরেজি ভাষা ও শিক্ষার বিষয় হোক পাশ্চাত্যের জ্ঞান -বিজ্ঞান । এই মতের সমর্থক ছিলেন আলেকজান্ডার ডাফ , টমাস ব্যাবিংটন মেকলে , রাজা রামমোহন রায় প্রমুখ পণ্ডিত । 


( iv ) রামমোহনের প্রস্তাব : ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে রাজারামমোহন রায় বড়োলাট লর্ড আমহার্স্টকে চিঠি লিখে পাশ্চাত্য শিক্ষার পক্ষে রায় দেন । এমনকি এলফিনস্টোন তাঁর বিখ্যাত প্রস্তাবে ওই একই মত পোষণ করেন । 

( v ) সমাধান : তৎকালীন ভারতের বড়োলাট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক উক্ত সমস্যা সমাধানের জন্য জেনারেল কমিটি অব্ পাবলিক ইন্সট্রাকশনের সভাপতি মেকলের ওপর দায়িত্ব দেন । অবশেষে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি মেকলে তাঁর রিপোর্ট পেশ করেন । এই রিপোর্টে তিনি পাশ্চাত্য শিক্ষার পক্ষে জোর সওয়াল করেন । 


মন্তব্য : শেষপর্যন্ত ভারতের বড়োলাট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক মেকলের প্রস্তাবে সায় দিলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের আর কোনো বাধা থাকল না ।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন