উত্তর: বিংশ শতাব্দীতে নাট্যকাররা ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বকে মুক্তি আকাঙ্খার প্রতীক রূপে ভেবে নাটক রচনায় ব্রতী হন । শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের “ সিরাজদ্দৌলা ” নাটকের সিরাজ সেরকমই এক ব্যাক্তিত্ব । তাঁর চরিত্রের যে গুন গুলি সহজেই আমাদের আকর্ষণ করে , সেগুলি হল
দেশাত্মবোধ : সিরাজ তাঁর নিজের বিরুদ্ধে যাবতীয় ষড়যন্ত্রকে কখনোই ব্যাক্তিগত আলোকে দেখেননি । বরং বাংলার বিপর্যয়ের দুশ্চিন্তাই তাঁর কাছে প্রধান হয়ে ওঠে । বাংলাকে বিদেশী শক্তির হাত থেকে বাঁচাতে তিনি অধস্তনদের কাছে ক্ষমা চাইতে বা শত্রুর সঙ্গে সন্ধিতেও পিছপা হন না ।
সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত মানসিকতা : সিরাজ বুঝেছিলেন বাংলা শুধু হিন্দুর নয় , বাংলা শুধু মুসলমানের নয় , হিন্দু মুসলমানের মিলিত প্রতিরোধই পারে বাংলা কে ব্রিটিশ দের আগ্রাসন থেকে রক্ষা করতে । সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত এই জাতীয়তাবোধ সত্যিই বিরল দৃষ্টান্ত ।
আত্মসমালোচনা : নবাব বুঝেছিলেন ষড়যন্ত্ররা যেমন ভুল করেছে , তেমনি অনেক ত্রুটি আছে তাঁর নিজেরও । বাংলার বিপদের দিনে তাই তিনি নিজের ভুল স্বীকারে দ্বিধাগ্রস্ত হন না ।
দুর্বল মানসিকতা : সিরাজ তাঁর শত্রুদের চক্রান্ত বুঝতে পারলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো কড়া ব্যাবস্থা নিতে পারেননি । তেমনই ঘসেটি বেগমের অভিযোগেরও তিনি প্রতিবাদ করতে পারেন না বরং নিজের দুর্বলতা নিজে মুখেই স্বীকার করে নেন , “ পারি না শুধু আমি কঠোর নই বলে ।”
সব মিলিয়ে লেখক সিরাজ কে সফল ট্র্যাজিক নায়কের রূপ দিতে সক্ষম হয়েছেন ।