উত্তর: রবীন্দ্রনাথের ‘ আফ্রিকা ’ কবিতায় উদ্ধত পংক্তিটিতে অপমানিত আফ্রিকাকে এ কথা বলা হয়েছে ।
[ ] রবীন্দ্রনাথ তাঁর “ আফ্রিকা ” কবিতায় “ অপমানিত ইতিহাস ” বলতে সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের দ্বারা শোষিত আফ্রিকার বঞ্চনা ও লাঞ্ছনার ইতিহাসকে বুঝিয়েছেন । সৃষ্টির সূচনা থেকেই আফ্রিকা অরণ্যবৃত , তথাকথিত উন্নত সভ্যতার আলো থেকে বহুদূরে নির্বাসিত ছিল । সভ্য ইউরোপীয় সভ্যতার চোখেও আফ্রিকা উপেক্ষিতা ছিল দীর্ঘ দিন । তথাকথিত সভ্য পাশ্চাত্য সভ্যতা আফ্রিকার নিজস্ব জীবন ধারা , ঐতিহ্য , সংস্কৃতি ইত্যাদিকে স্বীকার করত না । কিন্ত ঊনবিংশ শতকে ইউরোপীয়রা আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপন শুরু করে এবং এই শতকের শেষে প্রায় পুরো আফ্রিকা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের উপনিবেশে পরিণত হয় । আফ্রিকার সম্পদের সন্ধান পেতে এই শ্বেতাঙ্গ ঔপনিবেশিক তথা সাম্রাজ্যবাদীর দল শুরু করল মানবিক লাঞ্ছনা । আফ্রিকার কৃষাঙ্গ সরল মানুষ গুলো কে লোহার হাতকড়ি পরিয়ে মানুষ ধরার এই বর্বরেরা তাদের পরিণত করল ক্রীতদাসে । তাদের বর্বরতা ও লোভ আফ্রিকার সূর্যহারা অরণ্যের চেয়ে নিকষ কালো । এই সব অত্যাচারিত মানুষ দের রক্ত ও অশ্রুতে কর্দমাক্ত হয় আফ্রিকার বন পথের ধুলো । সাম্রাজ্যবাদী দস্যুদের কাঁটা মারা জুতোর তলার কাদার পিন্ড আফ্রিকার অপমানিত ইতিহাসে চিরচিহ্ন দিয়ে হয়েছে ।